তিন বছর ধরে নিজ বাড়িতেই শিকলবন্দী জীবন কাটাচ্ছে ১০ বছরের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু নাহিদ হোসেন। টাকার অভাবে তার বাবা-মা তাকে চিকিৎসা করাতে পারছেন না, এমনকি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও পাননি।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সড়াতৈল গ্রামের দিনমজুর রুহুল আমিন ও সীমা খাতুনের প্রথম সন্তান নাহিদ। ছোটবেলায় স্বাভাবিক থাকলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিক ভারসাম্য হারানোর লক্ষণ দেখা দেয়। চিকিৎসার জন্য যা কিছু ছিল, তা বিক্রি করেও কোনো উন্নতি হয়নি।
নাহিদের মা সীমা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একজন মা হয়ে নিজের সন্তানকে শিকলে বেঁধে রাখা কতটা কষ্টের, তা বোঝানোর ভাষা নেই। চিকিৎসার অভাবে সে দিন দিন আরও অসহায় হয়ে পড়ছে। আমি যদি মরে যাই, তখন কে দেখবে আমার ছেলেকে?
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি এই ঘটনার বিষয়ে অবগত নন। তবে যদি কারো বিরুদ্ধে টাকা দাবির অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, এখন শতভাগ প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং নাহিদকেও দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে, রাজশাহী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী অটিস্টিক বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ কল্পনা রায় ভৌমিক জানান, কোনো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে শিকলে বেঁধে রাখা আইনত অপরাধ। এটি শিশুটির মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চরম নির্যাতন। তিনি অনুরোধ জানান, দ্রুত নাহিদের শিকল খুলে তার যথাযথ চিকিৎসা ও যত্নের ব্যবস্থা করতে হবে।