ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রামাদ আল-আলিমি। ইয়েমেনি এক নাগরিককে হত্যার দায়ে ২০১৭ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন ওই নারী। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এক মাসের মধ্যেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে। খবর এনডিটিভি এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে ভারত অবগত রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন, প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে তার পরিবার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তার মুক্তির জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল পরিবার। এমন অবস্থায় ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুদণ্ডের সিদান্তে তারা হতাশ হয়েছেন। ৩৬ বছর বয়সী প্রিয়ার মা প্রেমা কুমারী চলতি বছর ইয়েমেনের রাজধানী সানায় পৌঁছায়। সেখানে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে অর্থসহযোগিতার মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন। কেরালার পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা পেশায় নার্স ছিলেন। স্বামী এবং মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ইয়েমেনে। ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনের এক হাসপাতালে কাজ করতেন নিমিশা। ২০১৪ সালে তার স্বামী এবং ১১ বছরের কন্যা ভারতে ফিরে এলেও তিনি সে দেশেই থেকে যান। স্বপ্ন ছিল নিজের ক্লিনিক খোলা। ওই বছরই মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। মাহদি তাকে নতুন ক্লিনিক খুলতে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। ২০১৫ সালে দু’জন মিলে ক্লিনিকও খোলেন। এর পর থেকেই শুরু হয় দুই অংশীদারের মতবিরোধ। অভিযোগ, এক পর্যায়ে নিমিশার পাসপোর্টও কেড়ে নেন মাহদি। একাধিক বার পুলিশের দ্বারস্থ হলেও লাভ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন ওই নার্স। নিমিশার দাবি, মাহদিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। এরপর আরেক জনের সাহায্য নিয়ে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে পানির ট্যাঙ্কে ফেলে দেন তিনি। ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান। ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। মেয়েকে বাচানোর সব রকম চেষ্টা করেন নিমিশার মা প্রেমা কুমারী। কিন্তু গত বছর নিমিশার সাজা মকুবের শেষ আবেদনও খারিজ করে দেয় ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্ট।